স্বে”ছায় গৃহবন্দি বিষণœ, বিপর্যস্ত বাবুল আক্তার

ডেস্ক রিপোর্ট : বিষণœ ও বিপর্যস্ত পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার গত তিনদিন স্বে”ছায় গৃহবন্দি দিন কাটা”েছন। শিশু সন্তানের সামনে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। পরে স্ত্রীর দাফন ও মামলা দায়েরের পর থেকে দুই শিশু সন্তান নিয়ে রাজধানীর মেরাদিয়ায় শ্বশুরবাড়িতেই দিন কাটা”িছলেন। পুলিশ সদর দফতরে গিয়ে নিয়মিত অফিসও করছিলেন। স্ত্রী হত্যার বিষয়েও তদন্তে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। গণমাধ্যমের সঙ্গেও কথা বলছিলেন তিনি।

কিš‘ হঠাৎ ছন্দপতন হয় গত শুক্রবার মধ্যরাতে। আইজিপির কথা বলে মেরাদিয়ার ভূঁইয়া পাড়ার শ্বশুরবাড়ি থেকে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। দীর্ঘ ১৫ ঘণ্টা সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার বিকালে আবার তাকে ওই বাড়িতে ফেরত দিয়ে আসা হয়। এরই মধ্যে শনিবার সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল সাংবাদিকদের জানান, স্ত্রী হত্যাকাকাণ্ডের বিষয়ে তথ্য জানতে গ্রেফতার কয়েকজন আসামির মুখোমুখি করে বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হ”েছ। অন্যদিকে, এই ১৫ ঘণ্টার বিষয়ে পুলিশের রাখঢাকের কারণে ছড়াতে থাকে গুজবের ডালপালা।

শনিবার বিকাল ৪টার দিকে বাড়ি ফিরে একেবারেই চুপ হয়ে যান বাবুল আক্তার। অনেকটা স্বে”ছায় গৃহবন্দি করে রেখেছেন নিজেকে। প্রয়োজন না হলে ঘরের লোকদের সঙ্গেও তেমন কথা বলছেন না। দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে ঘুমান। এছাড়া, টিভি দেখে ও পত্রিকা পড়ে সময় কাটা”েছন। গত তিনদিনে তিনি ঘরের বাইরে বের হননি। নিজেও কোনও কথা বলছেন না। এমনকি তাকে নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথা বলতে শ্বশুর মোশাররফ হোসেনকেও নিষেধ করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাবুল আক্তারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেন জানান, তাকে নিয়ে গণমাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের কথা লেখা হ”েছ। সেজন্য তাকে বলেছিলাম তার অব¯’ান পরিষ্কার করতে। কিš‘ তিনি এ ব্যাপারে কোনও কথা বলতে রাজি নন। সম্ভবত পুলিশের উ”চ পর্যায় থেকে তাকে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে। সেজন্য বাবুল কথা বলছেন না।

তিনি কেমন আছেন জানতে চাইলে শ্বশুর মোশাররফ হোসেন বলেন, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও বিষণœ মনে হয়েছে। ডিবি কার্যালয় থেকে ফিরে আসার পর থেকে বাসার বাইরে বের হননি। প্রয়োজনের বাইরে স্বজনদের সঙ্গেও কথা বলছেন না। দুই শিশু সন্তানকে নিয়েই সময় কাটা”েছন। শিশু সন্তান মাহিরের সামনেই মিতুকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। সেজন্য মাহির মাঝে মাঝেই আতঙ্কিত হয়ে উঠে। বেশিরভাগ সময়েই বাবার গলা ধরে শুয়ে-বসে থাকে।

বাবুল আক্তারের ব্যাচম্যাট এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, শিশু সন্তানের সামনে স্ত্রী মিতুকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি মামলার বাদী হয়েছেন। এরপর থেকে বাদী হিসেবে তদন্তে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে তার নিয়মিতই যোগাযোগ ছিলো। তার কাছ থেকে তথ্য জানতে এর আগে তাকে কখনও এভাবে নিয়ে আসার প্রয়োজন হয়নি। তিনি নিজেই গিয়েছেন বিভিন্ন ¯’ানে। তাহলে এমন কী হলো যে, তাকে মধ্যরাতে তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। আর আসামি ছাড়া বাদীকে তো ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের কখনোই প্রয়োজন হয় না।

তাকে এভাবে তুলে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে আবার বাসায় ফিরিয়ে দিয়ে আসাটা পছন্দ করেননি ওই পুলিশ কর্মকর্তাও। এতে বাহিনী ও ব্যক্তি বাবুল আক্তার দু’পক্ষেরই ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

বাবুল আক্রেতারের শ্বশুর সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, বাবুল আক্তার এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এটা এখনও তিনি বিশ্বাস করেন না। তবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তাকে খুঁজে বের করা জর“রি। মামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে যাতে কেউ নিতে না পারে সেজন্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতিও তিনি আবেদন জানান।
বাবুল আক্তার ছুটি নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের একজন কর্মকর্তা বলেন, কেউ অসু¯’ থাকলে কিংবা বিশেষ কারণে প্রথমে মৌখিকভাবে অবহিত করে পরেও সেটা ছুটি হিসেবে মঞ্জুর করিয়ে নিতে পারেন। তাছাড়া বাবুল আক্তারকে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়েছে। তাকে কোথাও পোস্টিং দেওয়া হয়নি। তাই আপাতত তার কোনও অফিস নেই। পুলিশ সদর দফতরে এসে মাঝে মধ্যে সংশ্লিষ্ট শাখায় এসে হাজিরা দিয়ে থাকেন।
বাবুল আক্তার ছুটিতে আছেন কিনা জানতে চাইলে তার শ্বশুর মোশাররফ হোসেন বলেন, এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। তিনি বলেন, চাইলেই অনেক কথা বলা যায় না। বলতে পারছি না।
মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, বাবুল আক্তার নজরদারিতে রাখা হয়নি। নিরাপত্তার জন্য সেখানে পুলিশ দায়িত্ব পালন করেছে। বাংলা ট্রিবিউন

About Unknown

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments :

Post a Comment