ভারতে পবিত্র কোরআন অবমাননায় তিন হিন্দু যুবক গ্রেপ্তার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের পাঞ্জাবে সাংরুর জেলার মালারকোটলাতে পবিত্র কুরআন অবমাননার অভিযোগে তিন দুর্বৃত্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার তাদের আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের ৮ দিনের পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেন।
সোমবার রাতে পাতিয়ালা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া ওই দুর্বৃত্তরা হলো বিজয় কুমার (৪৬), নন্দ কিশোর (৫২) এবং গৌরব (২৪)।
ধৃতরা তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এদের কাছ থেকে একটি জিপ, একটি লাইটার, তিন জোড়া সার্জিক্যাল গ্লাভস, ৫০ গ্রাম সোনা এবং একটি সোনার চেনসহ অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, ইসলাম ধর্মগ্রš’ কুরআন শরীফ পোড়ানো সংক্রান্ত ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর উদ্দেশ্যে তারা ওই ঘটনা ঘটায় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ধৃতদের মধ্যে কট্টর মৌলবাদী তথা মুসলিম বিদ্বেষী বিজয় কুমারের বাড়ি হরিয়ানার জিন্দে। বর্তমানে সে দিল্লির বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ী। নন্দ কিশোর এবং গৌরবের বাড়ি পাঞ্জাবের পাঠানকোটের তারাগড়ে। এদের মধ্যে গৌরব হল নন্দ কিশোরের ছেলে। মঙ্গলবার তাদের মহকুমা বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে পেশ করা হলে তাদের ৫ জুলাই পর্যন্ত পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দেয়া হয়।

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ২৯৫-এ এবং ১২০-বি ধারা অনুযায়ী মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এই মামলায় মুখ্য অভিযুক্ত বিজয় ২০১০ সালে কানাডা এবং আমেরিকায় যায় এবং সেখানেও সে অপরাধমূলক কাজে জেল খেটেছে। ২০১৪ সালে গুরুদাসপুরে একটি মামলায় সে পলাতক ছিল।
একটি সূত্রে প্রকাশ, গত শুক্রবার রাতে পাঞ্জাবের মুসলিম অধ্যুষিত মালারকোটলা শহরে কুরআন শরীফের ছেঁড়া পাতা পড়ে থাকাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ক্ষুব্ধ মানুষজন এ ঘটনায় সাংরুর-লুধিয়ানা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়।
তারা রাজ্যে ক্ষমতাসীন আকালি দলের ¯’ানীয় বিধায়ক ফারজানা নিসারা খাতুনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এ সময় গেটের কাছে জড়ো হয়ে থাকা কয়েকশ’ মানুষের ভিড় দেখে ফারজানার নিরাপত্তারক্ষী আত্মরক্ষায় গুলি চালায়। এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা নিরাপত্তা রক্ষীদের কেবিনে হামলা চালায় এবং বিধায়ক এবং পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। ওই বিধায়ক অবশ্য অক্ষত রয়েছেন।
বিধায়কের অভিযোগ, এই ঘটনার নেপথ্যে বিরোধীদের হাত রয়েছে। অন্যদিকে, লুধিয়ানা জামে মসজিদের ইমাম হুঁশিয়ারি দেন যদি অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা না হয় তাহলে রমজানের শেষ জুমাকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করা হবে।
পুলিশ অবশ্য অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে ওই ঘটনার কিনারা করতে সমর্থ হয়েছে বলে দাবি করেছে। পুলিশ এ নিয়ে গভীর তদন্ত শুরু করেছে।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

About Unknown

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
    Blogger Comment
    Facebook Comment

0 comments :

Post a Comment