মুসলমানদের জন্য হজ ফরজ লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক
ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম হজ। নবী হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)-এর জন্মের পর তাকে বাঁচাতে মা বিবি হাজেরার জীবনযুদ্ধ এবং আল্লাহর নির্দেশে পিতা হজরত ইব্রাহিম (আ.) কর্তৃক তাকে কোরবানি করতে যাওয়ার ঘটনা থেকেই হজের উৎপত্তি। ওই ঘটনার পর থেকে পবিত্র কাবা শরিফ এবং তার আশপাশের সেই সব ঘটনার প্রতি সম্মান দেখাতে ইব্রাহিম অনুসারীরা জিলহজ মাসের এই সময়ে মক্কা নগরীতে সমবেত হতেন এবং নানা আনুষ্ঠানিকতায় হজ পালন করতেন। নবী ইব্রাহিমের বংশধর ইসলামের নবী হজরত মুহম্মদ (সা.) সেই হজকেই মুসলমানদের জন্য ফরজ করে যান। সেই থেকে সামর্থ্যবান মুসলমানরা জীবনে একবার হজ পালন করাকে আবশ্যক জ্ঞান করে থাকেন।
এরই মধ্যে পবিত্র মক্কা নগরী ভরে আছে গোটা দুনিয়ার ৩০ লাখের বেশি হজব্রতীর পদভারে এক অপার্থিব মুখরতায়। আরবী মাসের হিসাবমতে রাতের শুরুকেই দিনের সূচনা ধরা হয়ে থাকে। সেই হিসাবে জিলহজ মাসের আট তারিখ সন্ধ্যা থেকে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। মিনায় সমবেত লাখ লাখ আল্লাহর মেহমান ‘লাব্বাইক, অল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক/ইন্নাল হামদা, ওয়ান্নি মাতা, লাকা ওয়াল মুলক/লা শারিকা লাকা...’ ধ্বনি-প্রতিধ্বনিতে আসমান-জমিন মুখরিত করে তুলেছেন।
মক্কার পবিত্র মসজিদুল হারাম থেকে প্রায় নয় কিলোমিটার দূরে মিনা। হজের অংশ হিসেবে আল্লাহর মেহমানরা মিনা, আরাফাতের ময়দান, মুজদালিফায় অবস্থান করবেন। ৮ জিলহজ মিনায় সারাদিন এবং ৯ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে হাজীরা প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে আরাফাতের ময়দানে গিয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করবেন। এর পর আরাফাত থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে মুজদালিফায় রাতযাপন ও পাথর সংগ্রহ করবেন তারা। ১০ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে আবার মিনায় ফিরবেন তারা। মিনায় বড় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ, কোরবানি ও মাথা মুড়িয়ে বা চুল ছেঁটে মক্কায় পবিত্র কাবা শরিফ তাওয়াফ, সাঈ করবেন। তাওয়াফ শেষে মিনায় ফিরে ১১ ও ১২ জিলহজ অবস্থান ও প্রতিদিন তিনটি শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন।
হজে আসা মুসল্লিদের নিরাপত্তায় এ বছর সৌদি আরবে নিয়মিত বাহিনীর পাশাপাশি প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এবারের হজের আগে মক্কায় মসজিদুল হারামে নির্মাণকাজে ব্যবহৃত ক্রেন ভেঙে শতাধিক লোক নিহত হওয়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। মসজিদুল হারামসহ হাজীদের গমনাগমন স্থানসমূহে বিশেষ নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে এবং কেন্দ্রীয়ভাবে তা মনিটরিং করছে সৌদি রাজপরিবার।
হজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে হাজীরা যাবেন নবীজির রওজা মোবারক জিয়ারত করতে পবিত্র মদিনা শরীফে। এর পর পুত ও পবিত্র হয়ে ঘরে ফেরার পালা।
0 comments :
Post a Comment