মেক্সিকোর দক্ষিণে ‘ভয়ঙ্কর’ পুতুলের দ্বীপ
চঞ্চল ঘোষ, গা ছম ছমে পরিবেশ। কোথাও কোনো মানুষের চিহ্ন নেই। খাল, ছোট ছোট নালা, সারি সারি গাছ, ঘনজঙ্গল, সাপ, পশু-পাখি ও অন্যান্য বন্যপ্রাণী। দ্বীপ তো এমনই। মেক্সিকোর এ ধরনের একটি দ্বীপের সঙ্গে আগের সবকিছু রেখে শুধু যুক্ত করুন কতগুলো পুতুল। তবে এক বাক্যেই আপনি এটিকে বলতে পারেন পুতুলের দ্বীপ। কল্পনার আরও একটু গভীরে গেলে— ‘ভয়ঙ্কর পুতুলের দ্বীপ’!
মেক্সিকোর দক্ষিণে জিওচিমিলকো ক্যানালের পাশে অবস্থিত এই দ্বীপ। এর বাসিন্দা শত শত পুতুল। কোনো বসতি নেই দ্বীপে। তবে সারা দ্বীপ জুড়ে রয়েছ শুধু পুতুলের উপস্থিতি। মাথা যুক্ত, মাথা ছাড়া, অর্ধেক শরীর বা পুরো একটি পুতুল ঝুলে রয়েছে গাছের ডালে। দ্বীপ জুড়ে ছোট ছোট যে ঘর রয়েছে সেখানেও রয়েছে এমন পুতুল।
স্থানীয়দের কাছে দ্বীপটি ‘লা আইসলা দে লাস মুনেকাস’ নামে পরিচিত। ইংরেজিতে এই দ্বীপটি পরিচিতি পেয়েছে ‘পুতুলের দ্বীপ’ হিসেবে। স্থানীয় শহর কর্তৃপক্ষ ৯০ দশকে দ্বীপটিকে পরিষ্কার করার কার্যক্রম হাতে নেয়। তখনই প্রত্যেকের দৃষ্টিগোচর হয় ‘ভৌতিক’ এই পুতুল দ্বীপের।
দ্বীপটিতে কোনো মানুষ না থাকায় এমন উদ্যোগ নিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে ভূত, প্রেত, জীন, আত্মা কিংবা গা ছম-ছমে পরিবেশ পছন্দ করেন এমন পর্যটকদের কাছে ভ্রমণের জন্য আকর্ষণীয় স্থান হয়ে উঠেছে এই দ্বীপটি। যদিও এই দ্বীপে সকালের আলোতে যেতে হয় আর সন্ধ্যার আগে আগে স্থান ত্যাগ করতে হয় পর্যটকদের। কথিত আছে, ওই সময় আনাগোনা বেড়ে যায় ভূত-প্রেতদের! কারণ অনেকে যেমন শুনেছেন রসহ্যময় কণ্ঠের আওয়াজ, আবার কেউ দেখেছেন- দেহহীন চোখের অপলক তাকিয়ে থাকা।
রহস্যময় এই দ্বীপটি সম্পর্কে বলা হয়, অর্ধ-শতাব্দী আগে এই দ্বীপের একটি খালে ডুবে প্রিয় পুতুলসহ মারা যায় ছোট এক মেয়ে শিশু। এরপর থেকে খালে এসে জমা হতে থাকে শত শত পুতুল। পরবর্তী সময়ে দ্বীপের একমাত্র বাসিন্দা ডন জুলিয়ান তা সংগ্রহ করে দ্বীপবাসী হিসেবে ওই পুতুলগুলোকে ‘আশ্রয়’ দেন। মৃত্যুর আগ অবধি পুতুল সংগ্রহ করে গেছেন তিনি। তার মৃত্যুর আগে ও পরে কোনো মানুষ থাকেনি এই দ্বীপে।
0 comments :
Post a Comment